১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ■ ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণঅনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার : জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন হবে অক্টোবরের মধ্যেই

||

ডেইলিপ্রেসক্লাব২৪.কম

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার। সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার পর কমিশন যেভাবে সুপারিশ করবে সেই আলোকেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বিভিন্ন আইন প্রণয়ন যুক্তিযুক্ত হবে বলে মত দেন তিনি।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের গণঅনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে তিনি এই আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চার প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্তকে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এছাড়া মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মণীন্দ্র চন্দ্র নাথসহ অনশনরত সদস্যদের পানি পান করান কবির বিন আনোয়ার। এর মধ্য দিয়ে সাড়ে ৩৪ ঘণ্টা পর অনশন ভঙ্গ করলেন তারা।

গতকাল শনিবার বিকাল ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান কবির বিন আনোয়ার। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রæতিগুলো নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। অন্তত তিনটি আইনের কথা আমি জানি; বৈষম্য বিলোপ আইন সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আছে। অর্পিত সম্পত্তি আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দেবোত্তর সম্পত্তি আইনটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আছে। তবে আমি মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে দাবি সেটি আগে পূরণ হওয়া জরুরি। সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের কাজটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। সে কারণেই আমরা সবার আগে কমিশন গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছি। অতিদ্রুত ভালো খবর দিতে পারব। কমিশিন গঠন করার পর কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে আইনগুলো করা হলে সেটি ভালো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অক্টোবরের মধ্যেই এই কমিশন গঠন করা হবে।

রাণা দাশগুপ্ত বলেন, আমাদের দাবিগুলো আমলে নিয়ে সরকার সেগুলো পূরণের অঙ্গীকার করেছে। সরকারকেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ইতোমধ্যে কিছু আইন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, এগিয়ে আছে। এগিয়ে আছে এ কথা সত্য। কিন্তু সেটিও এক বছর আগের কথা। এক বছরের মধ্যে সেগুলোকে সংসদে নেয়ার যে প্রক্রিয়া সেটি সম্পন্ন হয়নি।

তিনি বলেন, অতীতেও অনেকে অনেক কথা বলেছেন। প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। কিন্তু পরে কেউ কথা মনে রাখে না। আমরা এটিও বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আমরা কারো ওপর ভরসা বা বিশ্বাস করতে চাই না। একজন আইনের ছাত্র হিসেবে বলতে পারি, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন সংসদে উত্থাপন করতে খানিকটা সময় দরকার। সেটি অক্টোবরের মধ্যে সম্ভব নয়। তবে অক্টোবর মাসের মধ্যে কমিশন গঠনের যে আশ্বাস আমরা পেয়েছি তা বাস্তবায়িত হবে বলে বিশ্বাস করে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি নেব। যতক্ষণ আমাদের দাবি বাস্তবায়িত হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মসূচি এগিয়ে যাবে। ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তৃতীয়বারের মতো মহাসমাবেশ করতে চাই। অঙ্গীকার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অক্টোবর-নভেম্বর মাসেও কর্মসূচি অব্যাহত রাখব।

দুই দিনের এই কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে সরকারি দলের কোনো নেতা না আসার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, যারা আমাদের কাছে ভোট চান, আমরা যাদের ভোট দেই তারা কেউ আমাদের কর্মসূচিতে আসেননি। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আপনি ভোট চাইবেন না আর আমাকে ভোট দিতে হবে সেটি হবে না। এই বার্তাটি আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য কবির বিন আনোয়ারের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে সরকারি দলের সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের দাবিতে গত শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৪৮ ঘণ্টার গণঅনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ঐক্য পরিষদ। অনশনরত অবস্থায় গতকাল সকালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রাণা দাশগুপ্ত। মহিলা ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শিখা মণ্ডল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া আরো কয়েকজন নেতাকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন।

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর

বিভাগীয় সংবাদ