সরকার নির্ধারিত দামে পেঁয়াজ নেই রাজধানীর বাজারগুলোতে। বিক্রি হচ্ছে খেয়াল খুশি মতো। বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম না কমায়, তারাও বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। অপরদিকে বিক্রেতাদের স্বেচ্ছাচারিতায় বিরক্ত ক্রেতারা।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বাজারগুলোতে ৭০ টাকার কমে আমদানি করা পেঁয়াজের দেখা মেলেনি। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে।
যদিও গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোক্তা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। এদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ভোক্তাপর্যায়ে আলুর দাম হবে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। আর পেঁয়াজের দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার মাঠে থেকে এটি মনিটরিং করবেন।
তবে বাস্তবে তার প্রয়োগ খুব একটা দেখা যায়নি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে বাড়তি দামে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানি বলেন, আড়তে দাম বেশি। আমরা কেজিতে ৫ টাকাও লাভ পাই না। ধরতে হইলে পাইকারদের ধরেন।
এদিকে পাইকারি বাজারের বিক্রেতারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী নন। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট থেকে পাইকারি দরে পেঁয়াজ কিনে খুচরা বিক্রি করেন মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন। তিনি জানান, পেঁয়াজের পাইকারি বাজার থেকে তাদের রশিদ দেওয়া হয় না। তাই বাড়তি দাম প্রমাণ করার মাধ্যমও নেই তাদের হাতে।
বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। নিত্যপণ্যের চড়া দামে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ বাজারে বাজার করতে এসে পণ্যের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাথী বেগম। তিনি বলেন, কোন জিনিসটার দাম কম আছে? এইভাবে আর চলতে পারছি না।
সাথী বেগমের মতো একই ক্ষোভ নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করা আল আমিন হোসেনের। তিনি বলেন, যে টাকা বেতন পাই, তা সব বাজারেই যায়। গত মাসে ধার করে বাসা ভাড়া দিছি। এই মাসে এখনো ভাড়া দিতে পারি নাই। কোন দিকে যাব?
সবজির বাজারেও আগুন। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। করলার কেজি ৮০ টাকা। কিছুটা কমে পাওয়া যাচ্ছে ঢেঁড়স। বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা পিস।
বরবটির কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দল ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চিচিঙ্গা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা। এছাড়া শসার কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, লাউয়ের পিস ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০ টাকা।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে লেবু। হালি ১০ থেকে ২০ টাকা। ধনে পাতার কেজি ৪০০ টাকা। কাঁচা মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা।